🌸 গল্প ১: শেষ আজান
আজানের ধ্বনি উঠেছে মসজিদে। বুড়ো মুয়াজ্জিন আব্দুল কাদের হাঁটতে পারছেন না, তবু উঠলেন। বললেন, “এই কণ্ঠ দিয়ে সারা জীবন মানুষকে নামাজে ডেকেছি, আজ যদি না ডাকি, কী জবাব দেব আল্লাহকে?”
তিনি আজান শেষ করতেই চুপচাপ বসে পড়লেন। লোকজন ছুটে এল, কিন্তু তিনি আর জেগে উঠলেন না। ঠোঁটে তখনও শেষ ডাক — “হায়া আলাস সালাহ্…”
গ্রামের মানুষ কাঁদল, কেউ বলল, “মৃত্যুর সময়েও নামাজের ডাক দিয়েই চলে গেলেন।”
🌙 গল্প ২: হারানো দোয়া
রেহান প্রতিদিন মায়ের দোয়া নিতে ভুলত না। একদিন রাগ করে ঘর ছেড়ে গেলো, মায়ের চোখে জল।
রাস্তায় দুর্ঘটনা, গাড়ি ছিটকে গেল খাদের দিকে—কিন্তু অবাক ব্যাপার, বড় ক্ষতি হয়নি। হাসপাতালে চেতনা ফিরে সে প্রথমে জিজ্ঞেস করল, “মা কি দোয়া করেছিলেন?”
ডাক্তার হেসে বলল, “তুমি যখন এসেছিলে, তোমার কানে কুরআনের আয়াত পড়ছিল এক বৃদ্ধা—বোধহয় তোমার মা।”
রেহান কেঁদে উঠল, বুঝল — মায়ের দোয়া কখনো হারায় না।
🌾 গল্প ৩: এক টুকরো রুটি
আসমা দরিদ্র বিধবা। একদিন নিজের ছেলের ক্ষুধা মেটাতে আধা রুটি রেখে বাকিটা রাস্তার ভিক্ষুককে দিলেন। রাতে ছেলেটি কেঁদে ঘুমিয়ে পড়ল।
সকালে দরজায় কড়া নাড়ল এক অচেনা লোক—বলল, “আমি কাল তোমার দেওয়া রুটিতে বেঁচেছিলাম। আজ তোমার জন্য কাজ আছে।”
আসমা তাকিয়ে বলল, “আল্লাহ রিজিকের মালিক, তিনি ফিরিয়ে দেন অচেনার হাত দিয়েও।”
🌹 গল্প ৪: নামাজের সময়
রাহিম ছিল দোকানদার। বিকেলবেলা নামাজের আজান হল, কিন্তু দোকানে অনেক ক্রেতা। সে ভাবল, “এখন গেলে ব্যবসা কমে যাবে।”
এক বৃদ্ধ ক্রেতা বলল, “বাবা, রিজিক আল্লাহ দেন, তুমি শুধু দায়িত্ব পালন করো।”
রাহিম আজানের ডাকে সাড়া দিল। ফিরে এসে দেখল, তার অনুপস্থিতিতে দোকানের পাশে আগুন লেগেছিল, কিন্তু তার দোকান অক্ষত।
সে কেঁদে বলল, “আল্লাহর ঘরে যাওয়া ক্ষতি নয়, বরং রক্ষা।”
🌙 গল্প ৫: ক্ষমা
রুবিনা গরিবের মেয়ে, চাকরির ইন্টারভিউতে এক ধনী মহিলা অপমান করেছিল তাকে। বছর দুয়েক পর সেই মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়ে, সাহায্যের জন্য আবেদন করে—যে কোম্পানির প্রধান এখন রুবিনা।
সবাই ভাবল, রুবিনা হয়তো প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু সে বলল, “যে আমায় কষ্ট দিয়েছিল, আমি তার জন্য দোয়া করি।”
মহিলা কেঁদে বলল, “তুমি প্রকৃত মুসলমান।”
রুবিনা মুচকি হেসে বলল, “আমি শুধু শিখেছি—যে ক্ষমা করে, আল্লাহ তাকে উঁচু করেন।”
🌾 গল্প ৬: এক ফোঁটা অশ্রু
ইমরান নামাজে দাঁড়ালেও মন থাকত দুনিয়ার চিন্তায়। একদিন ইমাম সাহেব খুতবায় বললেন, “যে নামাজে মন দেয় না, সে যেন খালি দেহ নিয়ে সেজদা করে।”
ইমরান সেই রাতে কান্নায় ভিজে নামাজ পড়ল। তার চোখের পানি পড়ল সিজদার জায়গায়। মনে হল, প্রথমবার সে সত্যি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়েছে।
সেদিন থেকে সে আর নামাজকে তাড়াহুড়া করে না—সে বলে, “এক ফোঁটা অশ্রুই আমাকে বদলে দিল।”
🌸 গল্প ৭: শেষ ইচ্ছা
হাসপাতালের বেডে বৃদ্ধ শিক্ষক আহমদ সাহেবের শেষ সময়। ছেলেরা জড়ো হয়েছে, কেউ কোরআন পড়ছে না।
তিনি ফিসফিস করে বললেন, “আমার কবরের পাশে যেন আজানের শব্দ শোনা যায়।”
ছেলে কেঁদে প্রতিজ্ঞা করল—প্রতিদিন সেখানে নামাজ হবে।
আজও গ্রামের সেই ছোট মসজিদে আজান উঠলে, মানুষ বলে, “এটা আহমদ সাহেবের ইচ্ছার ফল।”
🌤 গল্প ৮: সততার মূল্য
ফয়সাল রিকশাচালক। একদিন যাত্রী ভুলে মোবাইল ফেলে যায়। বন্ধুরা বলল, “এটা বিক্রি করে দে।” কিন্তু সে বলল, “হারানো জিনিস ফিরিয়ে দেওয়া সুন্নত।”
পরদিন যাত্রী এসে কৃতজ্ঞ হয়ে বলল, “তুমি সততার প্রমাণ দিলে, তোমাকে আমার অফিসে চাকরি দেব।”
ফয়সাল বলল, “আমি কিছু চাই না, শুধু দোয়া।”
তবুও সে চাকরি পেল। পরে বলত, “আমি একটুখানি সততা দেখিয়েছিলাম, আল্লাহ পুরো জীবন বদলে দিলেন।”
🌾 গল্প ৯: ভিক্ষুকের দোয়া
রিজওয়ান একদিন অফিসে যেতে দেরি করছিল। রাস্তায় এক ভিক্ষুক বলল, “একটা রুটি দাও।”
রিজওয়ান বিরক্ত হয়ে বলল, “সময় নেই!”
রাতেই অফিস থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা—গাড়ি উল্টে গেল, কিন্তু সে অক্ষত রইল। হাসপাতালে জেগে দেখে, পাশে বসা সেই ভিক্ষুক বলছে, “আজ সকালে তোমার জন্য দোয়া করেছিলাম।”
রিজওয়ানের চোখে পানি। বুঝল—অলৌকিক রক্ষা সেই দোয়ার ফলেই।
🌙 গল্প ১০: হারানো তসবিহ
সাদিয়া দাদির পুরনো তসবিহ হারিয়ে খুব কষ্ট পেয়েছিল। প্রতিদিন নামাজ শেষে সেই তসবিহেই জিকির করত সে।
একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে ফুটপাথে পড়ে থাকা একটা তসবিহ কুড়িয়ে নিল। অবাক হয়ে দেখল—ওটাই দাদির তসবিহ!
তখন মনে পড়ল দাদির কথা, “যে জিনিস আল্লাহর স্মরণে ব্যবহৃত হয়, আল্লাহ তা হারাতে দেন না।”
সেদিন থেকে সাদিয়া প্রতিদিন বেশি জিকির করে।

.png)
.png)
.png)
Comments
Post a Comment